ট্টগ্রামে ৩ ম্যাচের একদিনের ক্রিকেট সিরিজের দ্বিতীয় খেলায় স্বাগতিক বাংলাদেশকে হারিয়ে সিরিজে সমতা এনেছে শ্রীলঙ্কা। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ৩ উইকেটে হারিয়েছে সফরকারিরা। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৮৬ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২ ওভার ৫ বল হাতে রেখে ৭ উইকেটে ২৮৭ রান করে জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। ম্যাচ সেরা হয়েছেন শ্রীলঙ্কার পাথুম নিসাঙ্কা।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে লঙ্কানদের ২৮৭ রানে লক্ষ্য দেয় টাইগাররা। জবাব দিতে নেমে তিন উইকেট এবং ১৭ বল হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় লঙ্কানরা।

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় সফরকারীরা। ইনিংসে প্রথম বলেই শরিফুলের শিকার হন আভিষ্কা ফার্নান্দো। ১৬ বলে ১৩ রান করে তাকে সঙ্গ দেন কুশল মেন্ডিস। এদিন ব্যাট হাতে আলো ছড়াতে পারেননি সাদিরা সামারাবিক্রমা। ৪ বলে ১ রান করে আউট হন তিনি।

তবে পিচের এক প্রান্ত আগলে রেখে রান তুলতে থাকেন আরেক ওপেনার পাথুম নিশাঙ্কা। ১০০ বলে নিজের সেঞ্চুরি তুলে নেন এই লঙ্কান ওপেনার। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন চারিথ আসালাঙ্কা। ব্যাট চালিয়ে রান তুলতে থাকেন দুজনই।

১১৪ রানে নিশাঙ্কাকে সাজঘরে ফেরান মিরাজ। এরপর ৯৩ বলে ৯১ রান করে আসালাঙ্কা আউট হলেও ততক্ষণে লঙ্কানদের জন্য জয়ের পথটা সহজ হয়ে যায়। ৪২তম ওভারে জানিথ লিয়ানাগেকে লেগ বিফোরে ফাঁদে ফেলেন তানজিম সাকিব। ১৬ বলে ৯ রান করে আউট হন এই ডান হাতি ব্যাটার। এতে কিছুটা চাপে পড়ে লঙ্কানরা।

শেষ পর্যন্ত ওয়েনিন্দু হাসানাঙ্কার ১৬ বলের ২৫ রান এবং দুনিথ ওয়েল্লালাগের ২৬ বলের অপরাজিত ১৫ রানে ভর করে তিন উইকেট এবং ১৭ বল হাতে থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় লঙ্কানরা।

বাংলাদেশের হয়ে শরিফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ দুটি করে উইকেট নেন। এ ছাড়াও তানজিম হাসান সাকিব, মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম একটি করে উইকেট নেন।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা একদমই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। আগের ম্যাচে ডাক মেরে ফিরেছিলেন লিটন দাস, তিনি ফেরেন এদিনও। স্কয়ার লেগে দুনিথ ভেল্লালগের হাতে ক্যাচ দেন মাদুশাঙ্কার বলে। সবমিলিয়ে শ্রীলঙ্কার এবারের সফরে তিনবার মাদুশাঙ্কার বলে আউট হন লিটন।

এরপর সৌম্য সরকারের সঙ্গে নাজমুল হোসেন শান্তর জুটিতে ম্যাচে ফিরে আসে বাংলাদেশ। ৭২ বলে তাদের ৭৫ রানের জুটি ভাঙে শান্ত ফিরলে। আগে দু দফা বাঁচলেও এবার আর রক্ষা হয়নি। মাদুশাঙ্কার বল ছাড়বেন কি না নিশ্চিত ছিলেন না শান্ত, এর মধ্যেই বল ব্যাট ছুয়ে চলে যায় উইকেটরক্ষক কুশল মেন্ডিসের গ্লাভসে। ৬ চারে ৩৯ বলে ৪০ রান করেন শান্ত

এদিকে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সৌম্য সরকার। তিনি খেলছিলেন বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে। কিন্তু হাসারাঙ্গাকে রিভার্স সুইপ করেন সৌম্য, কিন্তু তার ক্যাচ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ঝাঁপিয়ে ধরেন মাদুশাঙ্কা। ১১ চার ও ১ ছক্কায় ৬৬ বলে ৬৮ রান করেন সৌম্য। হাসারাঙ্গার ওই ওভারেই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ স্টাম্পিং হন শূন্য রানে।

দ্রুত দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশকে টেনে তোলার চেষ্টা শুরু করেন মুশফিকুর রহিম, তার সঙ্গী ছিলেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু ২৮ বলে ২৫ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে যান মুশফিকুর রহিম। ১৮ বলে ১২ রান করে মেহেদী হাসান মিরাজও ফিরলে চাপ কিছুটা বাড়ে।

পরে তানজিম হাসান সাকিব সঙ্গ দেন তাওহীদ হৃদয়কে। ৬২ বলে ৪৭ রানের জুটি গড়েন তাওহীদ হৃদয়। হাফ সেঞ্চুরি তোলা হৃদয় পরে হাত খুলতে শুরু করেন। শেষ দুই বলে ছক্কা হাঁকানো হৃদয় ১০২ বলে ৯৬ রানে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গে ইনিংস শেষ করে আসা তাসকিন আহমেদ ১০ বলে ১৮ রান করেন।